সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ রণিখাই ইউনিয়নের বর্ণিতে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ভস্মিত হয়েছে দিন মজুর পরিবারের বসত ঘর। বাদ পড়েনি দলিলপত্র, জন্ম নিবন্ধন,ভোটার আইডি কার্ড,পাসপোর্ট সহ গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র । ঘরে থাকা হাঁস মুরগি সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পুড়ে ছাই হয়ে যায়। আগুনে পুড়ে প্রায় ৫ লক্ষ টাকার মালামাল ক্ষতি হয়েছে।
অগ্নিকান্ডের ১৪ দিন পার হলেও সরকারী কিংবা বেসরকারি সহযোগীতা পাইনি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার। দিনমজুর পরিবারের ৭ সদস্য নিয়ে দুচোখে শুধু অন্ধকার দেখছেন সিরাজ মিয়া (৫৫)। অগ্নিকাণ্ডের পরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন কিংবা সাহায্যের ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি উপজেলা প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি কিংবা কোনো দাতা প্রতিষ্ঠান। হাড়কাপানো শীতে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের সদস্যদের ভাগ্যে জুটেনি কোনো কম্বল কিংবা শীতবস্ত্র।
সূত্রে জানা যায়,গত ৩১ ডিসেম্বর রাত সারে ০৮টায় বসত ঘরে ছেলে মেয়ে নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন সিরাজ মিয়ার স্ত্রী আজিরুনেচ্ছা। সিরাজ মিয়া তখন বাজারে ছিলেন। সিরাজের স্ত্রী হঠাৎ ঘুম থেকে উঠে দেখেন ঘরে আগুন জ্বলছে। চিৎকার করে এলাকাবাসীকে ডাকলেও আশেপাশে বাড়িঘর না থাকায় চুখের সামনেই ভষ্মিভূত হয়ে যায় স্বপ্নের বসত ঘর ও সব কিছু। শিশুদের নিরাপদে সরিয়ে নিলেও বসত ঘরের কোন মালামালই সরাতে পারেনি।
প্রত্যক্ষদর্শী মানিক মিয়া জানান, কেউ হতাহত না হলেও পুরো বাড়িটি পুড়ে শেষ হয়ে গেছে।
স্থানীয় এখলাছ আলী ক্ষুব্ধ হয়ে জানান, ঘটনার ২ সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও অসহায় পরিবারটির পাশে সাহায্যে হাত বাড়াতে কেউ আসেনি।
অগ্নিকান্ডের পরদিন সংবাদ প্রতিবেদক স্বরেজমিনে গিয়ে দেখেন স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার দারা মিয়া সেখানে উপস্থিত। তিনি প্রতিবেদককে আশ্বস্ত করেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারটির পাশে দাঁড়াবেন। কিন্তু অগ্নিকান্ডের ১৪ দিনেও পার হলেও তিনি কথা রাখেন নি।
ক্ষতিগ্রস্ত সিরাজ মিয়া প্রতিবেদককে অভিযোগ করেন, ঘর হারিয়ে অন্যের বাড়িতে বসবাস করছি। এখন পর্যন্ত কোনো সরকারী সাহায্য পাইনি। আমি দিন মজুর মানুষ। দিন আনি দিন খাই৷ চাল কিনে আনবো যে সেই পয়সাও হাতে নাই। ঘর বানাবো কিভাবে? এই শীতে কোনো কম্বল পাইনি।
ইউপি চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন ইমাদ প্রতিবেদককে বলেন, নির্বাচনী ঝামেলায় ভুলে গেছিলাম। আমি একবার গিয়ে দেখে এসেছিলাম। এ সময় তিনি আশ্বস্ত করেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারটি খুব দ্রুতই সাহায্য পাবেন।
উপজেলা ত্রাণ ও পূর্ণবাসন কর্মকর্তা বিদ্যুৎ কান্তি দাশ প্রতিবেদককে বলেন, নির্বাচনী ঝামেলা এবং বছরের শুরুতে বরাদ্দ না থাকায় তাৎক্ষণিকভাবে সহায়তা দিতে পারিনি। তবে জেলা ত্রাণ ও পূর্ণবাসন কর্মকর্তা বরাবর চাহিদা পত্র পাঠিয়েছি। খুব শিগ্রই সহায়তা পাবে পরিবারটি। তিনি বলেন আমি বর্তমানে ছুটিতে রয়েছি, অফিসে এসে ব্যবস্থা নেবো।
ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে সরকারী সহায়তা কিংবা শীতবস্ত্র না দেওয়ার বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুনজিত কুমার চন্দ সংবাদ প্রতিবেদককে বলেন, এ বিষয়ে আমি অবগত না। জেনে জানাবো।