surmavoice24.com
সিলেটসোমবার, ৯ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রাত ১১:৩৮
আজকের সর্বশেষ সবখবর

চোরাই গরু জবাই করে মাংশ বিক্রি করে কোম্পানীগঞ্জে


এপ্রিল ৫, ২০২৪ ৬:৪৭ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে সাম্প্রতিক সময়ে বেড়েছে গরু চুরি। চক্রের সদস্যরা এসব চোরাই গরু রাতারাতি হজম করতে অল্প দামে বিক্রি করছে উপজেলার বিভিন্ন মাংশের দোকানে। গতকাল শুক্রবার উপজেলার টুকের বাজারের একটি মাংশের দোকান থেকে জড়িত তিনজন সহ কালো রংয়ের একটি চোরাই গরুর মাংশ জব্দ করেন কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশ৷ আটক তিনজন হচ্ছে উপজেলার টুকের বাজার এলাকার মৃত শুকলালের পুত্র সঞ্জিত, কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার মৃত ইমান আলী পুত্র মোহাম্মদ আলী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার রাকা মিয়ার পুত্র ইউসুফ মিয়া।

পুলিশের হাতে আটক মোহাম্মদ আলী বলেন, গভীর রাতে এই গরুটি কিনেছে স্বপন মিয়া। এ কসাই খানার মালিক ৪ জন। জালাল মিয়া ও তার ভাই শাহ জালাল এবং স্বপন মিয়া। তবে প্রভাবশালী হওয়ায় অন্য আরেকজনের নাম বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি।

একাধিক ব্যক্তির তথ্যমতে জানা যায় অপ্রকশিত সেই ব্যক্তির নাম জাফর।

গরুর মালিক উপজেলার কাঠাল বাড়ি গ্রামের বিল্লাল মিয়া প্রতিবেদকক বলেন, গত রাত ২ টার সময় গোয়ালঘর থেকে আমার কালো রংয়ের ষাড় গরুটি চুরি হয়েছে। চোরাই গরু টুকের বাজারে পাওয়া যায় এমন ধারণা থেকেই গিয়েছিলাম। ভোর ৫টায় গিয়ে দেখি আমার গরুটি জবাই করে ফেলা হয়েছে। দেখে ফেলায় আমাকে ১ লক্ষ টাকা জরিমানা দিয়েছে তারা। চুরির বিষয়টি রফাদফা করতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও সাবেক এক জনপ্রতিনিধি তৎপর রয়েছে। দীর্ঘদিন যাবত চোরাই গরুর জবাইকৃত মাংশ কসাইখানায় বিক্রি হচ্ছে এমন একাধিক তথ্য রয়েছে প্রতিবেদকের হাতে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগের দায়েরের বিষয়ে গরুর মালিক বিল্লাল মিয়া বলেন, ওরা প্রভাবশালী। অভিযোগ দিলে আমার নিরাপত্তা কে দিবে?

এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাত ৩ টার সময় পাড়ুয়া লামাপাড়া গ্রামের মৃত ইউসুফ আলীর পুত্র ইব্রাহিমের বসত ঘর থেকে প্রায় দের লক্ষ টাকা মূল্যের একটি ষাড় চুরি করে এনে কামাল মিয়া নামের এক কসাইয়ের কাছে অল্প দামে বিক্রি করেন। এ নিয়ে বিচার সালিস হয়েছে ভুক্তভোগী ইব্রাহিমকে ৬০ হাজার টাকা দিয়ে রফাদফা করার চেষ্টা চলছে। জেলার বাইরে থেকে চোরাই গরু উপজেলার নয়াগাঙ্গেরপাড় গ্রামের কাচা মিয়া বাড়িতে এনে লুকিয়ে রাখা হয়। এরপর সুযোগ বুঝে হাট ইজারাদারের কাছ থেকে অবৈধ উপায়ে রশিদ এনে বিভিন্ন বাজারে প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে। উপজেলার টুকেরগাও ও নয়াগাঙ্গেরপাড়ে একটি শক্তিশালী চক্র গড়ে উঠেছে। বিভিন্ন শ্রেণির রাজনীতিবীদ এই চক্রের প্রশ্রয়দাতা। প্রাণভয়ে সেসব রাজনীতিবীদদের নাম মুখে নিতে চায় না স্থানীয়রা।

ইসরাফিল আলী নামে এক ব্যবসায়ী জানান, চোর এবং কসাই মিলে টুকের বাজারে বড় ধরনের একটা সিন্ডিকেট তৈরি করেছে। তারা চোরাই গরুর মাংস বিক্রি করতেছে।

উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক রাসেল আহমদ জানান, এই সিন্ডিকেট ভাঙ্গা দরকার। সেদিন একজন আমাকে বললো গরু চুরি গেলে এখন নাকি মানুষ টুকের বাজার খুজতে আসে। যা শুনে কষ্ট পাইলাম।

উপজেলা যুবলীগের আরেক সদস্য দেলোয়ার হোসেন রিপন বলেন, গরুর বাজার থেকে রিসিটও দেওয়া হয় গরু হালাল করার জন্য।আমাদের তেলিখাল ইউনিয়নে গরু চুরি গত এক বছরে অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে।

কসাইখানা দেখভাল করার দায়িত্বে থাকা উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের
এ আই টেকনিশয়ান (সেচ্ছাসেবী) ইমান আলী প্রতিবেদককে বলেন, শুনেছি চুরির গরু জবাই হয়েছে। চুরির গরু তাই মাংশে সিল মারিনি। তবে থানা সূত্রে জানা যায়, জব্দকৃত গরুর মাংশে (পরিক্ষিত) সিল মারা হয়েছে।

চুরাই গরুর মাংশে কিভাবে সিল মারা হয় এ প্রশ্নের জবাবে ইমান আলী সিল মারার বিষয়টি অস্বিকার করে বলেন, আমি গরুর মাংশে সিল মারিনি, শুধু মহিষের মাংশেই সিল মেরেছি।

এ দিকে কসাইখানা থেকে ৩ জন শ্রমিককে আটক করা গেলেও মূল আসামী স্বপনকে আটক করতে পারেনি।

এ বিষয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম দস্তগীর বলেন, অভিযোগ পেয়ে তিনজনকে আটক করেছি। কেউ অভিযোগ দিলে মামলা নিব। প্রয়োজনে বাদীভপক্ষকে নিরাপত্তা দিব।

কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো। বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।