surmavoice24.com
সিলেটরবিবার, ২৬শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ভোর ৫:০৯
আজকের সর্বশেষ সবখবর

কোম্পানীগঞ্জে বন্যায় থেমে গেছে জীবনাচার, ত্রাণের আশায় বানভাসি


জুন ১৯, ২০২৪ ১১:৪৩ অপরাহ্ণ
Link Copied!

 

নিজস্ব প্রতিবেদক: সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ইসলামপুর,ঘোড়ামাড়া,তৈমুরনগরের জন্য ফ্লাড সেল্টার সেন্টার না থাকায় অসহনীয় জনদূর্ভোগের মুখোমুখি হতে হয় ১৫/১৬ হাজার মানুষকে। বন্যাকালীন সময়ে নিকটস্থ আঞ্চলিক মহাসড়ক ছাড়া অন্য কোথাও আশ্রয় নেওয়ার সুযোগ নেই ঘনবসতিপূর্ণ এ গ্রামের মানুষদের। বাধ্য হয়েই খোলা আকাশের নিচে তাবু টাঙ্গিয়ে মানুষ ও গবাদিপশুদের আশ্রয় নিতে হয়। ভৌগোলিক দিক দিয়ে তিনটি গ্রামের মানুষজন একে অন্যের সাথে সম্প্রতি নজির রয়েছে। বন্যা আক্রান্ত হলেও তিনটি গ্রামের মানুষ পার্শ্ববর্তী টুকেরবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কিংবা পাড়ুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত স্থান না থাকায় আশ্রয় নিতে অনিহা। শুধু তাই নয়, আশ্রয় কেন্দ্র না থাকায় অসহায় ও হতদরিদ্র মানুষজন বন্যাকালীন সময়ে কোনো ত্রাণ সুবিধার আওতায় আসে না। যারফলে এ তিনটি গ্রামের মানুষজন প্রতি বছর অতি বন্যায় প্রকৃতির বিরুদ্ধে লড়াই করে আসলেও ভাগ্য বিধাতা প্রতিবছরই যেন তাদের বিপক্ষে। গত ২০২২ এর ভয়াবহ বন্যায় এ তিনটি গ্রামের হাজারের অধিক পরিবার তিন রাত্রি খোলা আকাশের নিচে ছাতা মাথায় দিয়ে রাত কাটাতে হয়েছে। চরম এ দূর্ভোগ থেকে পরিত্রাণ পেতে দ্রুত একটি ফ্লাড সেল্টার সেন্টারের দাবী জানান সুশীল সমাজ। ইউনিয়নে ৮ ফ্লাড সেল্টার সেন্টার রয়েছে। এর মধ্যে ৩টি ফ্লাড সেল্টার সেন্টার উপজেলা সদরের অর্ধ কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত। ইউনিয়নের সবচেয়ে বেশি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা বৃহত্তর টুকের বাজার। বিশাল এ ঘনবসতিপূর্ণ এ এলাকায় প্রায় ৩০ হাজার মানুষের বসবাস। অথচ সং্খ্যাধিক্য মানুষের জন্য মাত্র একটি ফ্লাড সেল্টার সেন্টার। যা জনসংখ্যা ও আশ্রিত চাওয়া বন্যার্তীর জন্য অপ্রতুল।

  • আশ্রয় কেন্দ্রে যায়গা না পেয়ে রাস্তায় ঘুরছে বন্যার্তিরা।
  • খাদ্য সঙ্কটে ২ হাজার বন্যা আক্রান্ত পরিবারের শিশু

 

হাসান মিয়া নামে ষাটোর্ধ জানান, ঘরে কোমড় পানি। কোথাও আশ্রয় পায়নি। মহিলা ও শিশুদের একটি গ্যারেজে রেখে আমি রাস্তায় রাস্তায় রাত কাটাচ্ছি। নেই সরকারী খাদ্য।

এমসি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আপন তাহসান জানান, বন্যায় অত্র এলাকার মানুষদের এগ্রাম ওগ্রামে ছোড়াছুড়ি করতে হয়। মাঝাড়ি বন্যায় হাজারের অধিক বসত ঘর পানিতে অর্ধনিমজ্জিত হয়ে যায়। তখন তারা খোলা আকাশের নিচে বসবাস করতে হয়।

ঘোড়ামারা গ্রামের বাসিন্দা ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আদনান বক্স জানান, ফ্লাড সেল্টার সেন্টার না থাকলে তিনটি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ কোনো ত্রাণ সুবিধা পায় না।

উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব আলী জানান, একটি ফ্লাড সেল্টার সেন্টার খুবই জরুরি। উপজেলার সবচেয়ে বেশি মানুষের বসবাস এ ইউনিয়নে। অথচ মাত্র ৮ টি ফ্লাড সেল্টার সেন্টার রয়েছে ইসলামপুর পশ্চিম ইউনিয়নে, যা আশ্রিত মানুষের জন্য অপ্রতুল্য। ফ্লাড সেল্টার সেন্টারে মানুষ আশ্রয় নিলেও পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তা পাচ্ছেনা।

গত শনিবার থেকে টানা বর্ষণে সিলেটের উত্তরের এ উপজেলার ১১৩টি গ্রাম প্লাবিত হয়। উপজেলায় মাত্র ৩৫ টি আশ্রয় কেন্দ্রে বন্যার্ত মানুষজনের আশ্রয়ের জন্য পর্যাপ্ত নয়। বন্যায় সবচেয়ে বেশি দূর্ভোগের শিকার হচ্ছে বয়স্ক ও শিশুরা। আশ্রয় কেন্দ্র গুলোতে সামান্য পরিমান শুকনো খাবারের ব্যবস্থা হলেও শিশু ও বয়স্কদের জন্যে খাবারের ব্যবস্থা নেই। যদিও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২ লক্ষ ৬০ হাজার টাকার শিশু খাদ্য বরাদ্দের কথা বললেও তেলিখাল ফ্লাড সেল্টার সেন্টারে শিশুখাদ্য বিতরণের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

১নং ইসলামপুর পশ্চিম ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান শেখ ফরিদ জানান, ৮ ফ্লাড সেল্টার সেন্টারের জন্য ৩ শত পরিবারের জন্য ১১ বস্তা চিড়া ও ২৮০ পিস গুড় এবং ৫ টন চাউল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ইউনিয়নের প্রায় দুই হাজার পরিবার বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়েছে।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, এ পর্যন্ত  ৯৫ হাজার মানুষ বন্যা আক্রান্ত হয়েছে।

এ দিকে গতকাল বুধবার বেলা ১টার সময় কোম্পানীগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি দেখার জন্য ও বানভাসি আশ্রিত পরিবার গুলোকে দেখতে আসেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মহিবুর রহমান। এ সময় তার সফর সঙ্গী ছিলেন অত্র মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুল হাসান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সভাপতি ইমরান আহমদ এমপি, বিভাগীয় কমিশনার আবু আহমদ সিদ্দিকী, সিলেট জেলা পরিষদ সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নাসির উদ্দীন খান, জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান, গোয়াইনঘাট সার্কেল সহকারী পুলিশ সুপার শহিদুল ইসলাম,জেলা পরিষদ সদস্য আপ্তাব আলী কালা মিয়া ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মজির উদ্দিন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুনজিত কুমার চন্দ,গোয়াইনঘাট সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ ফজলুর রহমান সহ উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, তাঁতীলীগ ও ছাত্রলীগ সহ বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও সদস্যরা।

 

 

কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো। বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।