surmavoice24.com
সিলেটসোমবার, ৯ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রাত ১১:৩৮
আজকের সর্বশেষ সবখবর

টিউশনির টাকা যোগাড় করতে গিয়ে জেলহাজতে ১০ম শ্রেণীর ছাত্র এনামুল হক


জুন ২৫, ২০২৪ ৮:৫৫ অপরাহ্ণ
Link Copied!

হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান এনামুল হক। সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার দলইরগাও উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণীর ছাত্র। উপজেলার খাগাইল গ্রামের জমির উদ্দিনের ছেলে এনামুল হক নিজের লেখাপড়া খরচ যোগাতে দিনমজুরের কাজ করেন। সুযোগ পেলে ট্রাকের হেলপারের কাজ করতেও দ্বিধাবোধ করে না। সোমবার সন্ধ্যায় লামাডেক্সিবাড়ি গ্রামের আত্মীয়ের বাড়ি থেকে ফেরার পথে তেলিখাল পয়েন্টে ট্রাক ড্রাইভার আবুলের সাথে দেখা হয়। আবুল তাকে আজ রাতে হেলপার হিসেবে কাজ করার অফার দিলে সে রাজি হয়। নিকটেই কাটাখাল নামক স্থানে ভোলাগঞ্জ পর্যটন কেন্দ্র থেকে চুরি করে আনা সাদা পাথর লোড করতে যায় আবুল ড্রাইভার। সাথে স্কুল ছাত্র এনামুল হক। আশা ছিল ২/৩ শত টাকা রুজি করতে পারলে সামনের মাসের টিউশনির খরচটা জোগাড় হবে। কিন্তু বিধিবাম, পাথর লোড করে নিয়ে আসার সময় সেখানে ট্রাক সহ পুলিশের হাতে আটক হোন ড্রাইভার আবুল, কথিত হেলপার এনামুল ও পাথরের ক্রেতা আব্দুল্লাহ। পাথরের মূল মালিক পলাতক। এ ঘটনায় তিনজনকে আসামী দেখিয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানায় মামলা করেন পুলিশ। মামলা নং ১৮।

এনামুলের পিতা জমির উদ্দিন বলেন, আমি হতদরিদ্র মানুষ। ছেলের লেখাপড়ার খরচ দিতে পারিনা। তাই সে নিজেই নিজের খরচ জুগায়। কখনো অন্যের জমিতে কাজ করেন। কখনো ট্রাকের হেলপার হিসেবে কাজ করেন। টিউশনির টাকা জোগাড় করতে গিয়ে এখন মামলার আসামী হলো। আশা ছিল ছেলে এসএসসি পাশ করলে পুলিশে চাকুরী করবে। কিন্তু পুলিশেই তাকে মামলা দিলো। সব আশায় গুড়েবালি।

কোম্পানীগঞ্জ ছাত্র পরিষদ সভাপতি হেলাল আহমদ জানান, এনামুল একজন সংগ্রামী ছাত্র। সে নিজের লেখাপড়ার খরচ নিজেই যোগান দিতো। কিন্তু এখন সে জেল হাজতে। আমরা এনামুলের সঙ্গে আছি। যতক্ষণ পর্যন্ত সে আদালত থেকে জামিন না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত তার পরিবারকে সাপোর্ট দিয়ে যাব।

এদিকে মামলার এজাহারে এনামুলের বয়স ১৯ দেখালেও। তার জন্ম নিবন্ধন সার্টিফিকেট অনুযায়ী  বর্তমান বয়স ১৬ বছর ৩ মাস ২৪ দিন। অপ্রাপ্তবয়স্ক একটা ছেলেকে ৩ বছর বেশি দেখিয়ে মামলায় জড়ানো হয়েছে যা মানবাধিকার লংঘন বলে জানান মানবাধিকার কর্মী ওমর ফারুক।

দলইরগাও উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহের আলী বলেন, মামলায় জড়িয়ে এনামুলের ভবিষ্যৎ নষ্ট করেছে পুলিশ। সে বিদ্যালয়ের নিয়মিত ছাত্র। পড়ার খরচ জুগাতে মাঝেমধ্যে সে শ্রমিকের কাজ করে। এটা তার অপরাধ হতে পারে না।

এ বিষয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানার (ভারপ্রাপ্ত) অফিসার ইনচার্জ মনিরুজ্জামান খান বলেন, আন্ডার এ্যজ হলে তদন্তের মাধ্যমে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মজির উদ্দিন বলেন, একজন স্কুল পড়ুয়া ছাত্রকে এভাবে মামলায় জড়ানো উচিত হয়নি। সে অপ্রাপ্তবয়স্ক। চাইলে শিশু আদালতে তুলতে পারতো।

কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো। বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।