সরকার পতনের সুযোগে সিলেটের ভোলাগঞ্জ ‘সাদাপাথর’ পর্যটন কেন্দ্র থেকে কয়েকদিনে শত শত নৌকায় ৩০ কোটি টাকার পাথর হরিলুট করা হয় বলে ধারণা করছেন স্থানীয়রা।
এ অবস্থায় মঙ্গলবার থেকে ভোলাগঞ্জে নজরদারি করছে সেনাবাহিনী। পাশাপাশি ছাত্র-জনতাও লুট রোধে কাজ করছে। পাথর রক্ষায় করা হয় মাইকিং। তবুও থামছেনা পাথর হরিলুট।
স্থানীয়রা জানান, গত সোমবার শেখ হাসিনা দেশত্যাগের পর সীমান্তঘেঁষা সাদাপাথর ও জাফলং পাথর কোয়ারি থেকে পাথর লুটে নামে বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ। সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত জাফলং জিরো পয়েন্ট এলাকা থেকেও শত শত নৌকায় এসে লোকজন পাথর লুট শুরু করে।
একইভাবে ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর কেন্দ্রেও চলে লুট। সেখানে ছাত্র-জনতা লুটেরাদের তাড়িয়ে দেওয়ার পর সেনাসদস্যরা অবস্থান নেন। এ ছাড়া সেনাবাহিনী থেকে পাথর চুরি না করতে মাইকিং করেছেন।
পর্যটন কেন্দ্রটি পাথর কোয়ারি এলাকায়। সীমান্তঘেঁষা সাদা পাথর স্তূপ আকারে পাথর জমে উঠেছে। সেখানকার পাথরই পর্যটকদের আকর্ষণ করে।
অন্যদিকে সাদাপাথর পর্যটন বাজারে ভাঙচুর চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় মালপত্র লুট করা হয়। গুড়িয়ে দেওয়া হয় অসংখ্য রেস্টুরেন্ট। ব্যবসায়ীরা জানান, হামলায় তাদের প্রায় দুই কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পর্যটন বাজারের জিরো পয়েন্ট, মেঘের বাড়ি, শাহ পরান, জয় বাংলা ও সেই স্বাদ রেস্টুরেন্টেসহ কয়েকটি কসমেটিকসের দোকানও ভাঙচুর করা হয়।

দুর্বৃত্ত কর্তৃক ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে মেঘের বাড়ি রেস্টুরেন্ট।
মেঘের বাড়ি রেস্টুরেন্টের মালিক সফাত উল্লাহ বলেন, দুর্বৃত্তরা তার প্রতিষ্ঠান থেকে একটি এসি, তিনটি ফ্রিজ, ২০০টি চেয়ার, ২০টি টেবিল ও দুটি জেনারেটরসহ আসবাবপত্র লুট করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। তার মালিকানাধীন দুইটি রেস্টুরেন্ট ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেওয়া হয়। এতে ক্ষয়ক্ষতি হয় প্রায় ৩০ লক্ষ টাকার মালামাল।
ছাত্র বৈষম্য আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আদনান সোহাগ প্রতিবেদককে জানান, সাদা পাথর লুট প্রতিরোধে ছাত্র জনতা নিয়ে দুইদিন যাবত মাঠে রয়েছে। তবুও বন্ধ হচ্ছিল না পাথর লুট। অবশেষে কঠোর অবস্থানে যায় সেনাবাহিনী সদস্যরা। গতকাল রাতে সাদা পাথরবাহী কয়েকটি স্টিলবডি নৌকা ধলাই ব্রীজের নিচ থেকে আটক করেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা।