surmavoice24.com
সিলেটসোমবার, ১০ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, সন্ধ্যা ৭:২৬
আজকের সর্বশেষ সবখবর

এখনো লেবাননে রয়েছে ইসরায়েলি সেনা


জানুয়ারি ২৬, ২০২৫ ৭:২৪ অপরাহ্ণ
Link Copied!

প্রত্যাহারের সময় পেরোনোর পরও লেবাননে থাকছে ইসরায়েলি বাহিনী

নির্ধারিত সময়সীমা পার হওয়ার পরও ইসরায়েলি সেনা রয়ে যাওয়ার বিষয়টিতে হিজবুল্লাহ কী প্রতিক্রিয়া জানাতে যাচ্ছে তা পরিষ্কার হয়নি।
লেবাননের দক্ষিণাঞ্চল থেকে ইসরায়েলিদের প্রত্যাহারের সময়সীমা রোববার ভোররাতে পার হয়ে গেলেও দেশটির সেনারা কয়েকটি এলাকায় রয়ে গেছেন। ইসরায়েল বলছে, হিজবুল্লাহর সঙ্গে হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি পুরোপুরি বাস্তবায়িত না হওয়ায় এমনটি হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের মধ্যস্থতায় ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর সঙ্গে ১৪ মাস ধরে চলা সংঘাত ৬০ দিনের এক যুদ্ধবিরতি চুক্তির মধ্য দিয়ে শেষ হয়। চুক্তিতে দক্ষিণ লেবানন থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার এবং হিজবুল্লাহর যোদ্ধা ও অস্ত্রশস্ত্র সরিয়ে নেওয়ার বিষয়টি নির্ধারিত হয়।

একই সময়ে ওই এলাকায় কয়েক হাজার লেবাননি সেনা মোতায়েনের কথা রয়েছে। হিজবুল্লাহ কয়েক দশক ধরে এই অঞ্চলের সবচেয়ে প্রভাবশালী শক্তি হিসেবে ছিল।

বিবিসি লিখেছে, এটি লেবাননের প্রেসিডেন্ট, সেনাবাহিনীর প্রধান যোসেফ আউনের জন্য প্রথম বড় ধরনের পরীক্ষা, যিনি দেশটিতে স্থিতিশীলতা আনতে চান।

শনিবার আউনের দপ্তর বলেছে, দক্ষিণের পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে ‘নিবিড় যোগাযোগ ও পরামর্শ’ অব্যাহত রাখা হয়েছে, এগুলোর মধ্যে ‘বিপজ্জনক ইসরায়েলি অনুশীলনও’ অন্তর্ভুক্ত।

নির্ধারিত সময়সীমা পার হওয়ার পরও ইসরায়েলি সেনা রয়ে যাওয়ার বিষয়টিতে হিজবুল্লাহ কী প্রতিক্রিয়া জানাতে যাচ্ছে তা পরিষ্কার হয়নি, তবে ইসরায়েলের সঙ্গে শত্রুতা আবার শুরুর বিষয়টি দেশটিজুড়ে প্রবল বিরোধিতার মুখে পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের পক্ষ নিয়ে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্তে হামলা শুরু করে হিজবুল্লাহ। ইসরায়েলও পাল্টা জবাব দিয়ে আসছিল। কিন্তু গত বছরের সেপ্টেম্বরে এই সংঘাত তীব্র যুদ্ধের রূপ নেয়।

ইসরায়েল লেবাননজুড়ে ব্যাপক ও ভয়াবহ বিমান হামলা চালিয়ে হিজবুল্লাহকে প্রায় নেতৃত্বশূন্য করে ফেলে। এরপর দক্ষিণ লেবাননে স্থল আক্রমণ শুরু করে তারা।

ইসরায়েলের এসব আক্রমণে লেবাননজুড়ে প্রায় চার হাজার মানুষ নিহত হয়। এদের মধ্যে বহু বেসামরিক আছেন। প্রায় ১২ লাখ লেবাননি বাস্তুচ্যুত হয়।

শুক্রবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর এক বিবৃতিতে বলে, “যুদ্ধবিরতিতে ইসরায়েলি বাহিনীর প্রত্যাহারের রূপরেখার শর্ত ছিল হিজবুল্লাহ নিজেদের প্রত্যাহার করে লিটানি নদীর অপর পাশে সরে যাবে আর চুক্তি পুরোপুরি এবং কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করতে দক্ষিণ লেবাননে দেশটির সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হবে।”

লিটানি লেবানন ও ইসরায়েলের মধ্যবর্তী অনানুষ্ঠানিক সীমান্ত ‘ব্লু লাইন’ থেকে লেবাননের ৩০ কিলোমিটার ভেতরের দিকের একটি নদী।

ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “যেহেতু লেবানন রাষ্ট্র এখনও যুদ্ধবিরতি চুক্তি পুরোপুরি বাস্তবায়ন করেনি, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পূর্ণ সমন্বয়ের মাধ্যমে ধীরে ধীরে প্রত্যাহার প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখা হবে।”

তবে ইসরায়েলি বাহিনী লেবাননে আর কতোদিন অবস্থান করবে বিবৃতিতে এ বিষয়ে পরিষ্কার কিছু বলা হয়নি। লেবাননে কতোজন ইসরায়েলি সেনা এখনও রয়ে গেছে তাও পরিষ্কার হয়নি।

শনিবার এক বিবৃতিতে লেবাননের সেনাবাহিনী বলেছে, “তারা সীমান্ত বরাবর এলাকাগুলোতে সেনা মোতায়েন বাড়ানোর মধ্য দিয়ে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন অব্যাহত রেখেছে, কিন্তু সেনা প্রত্যাহারে ইসরায়েলি শত্রুদের দীর্ঘসূত্রিতা সেনাবাহিনীর মোতায়েন মিশনকে জটিল করে তুলছে।”

বাসিন্দাদের সীমান্ত এলাকায় ফেরা থেকে বিরত থাকার জন্যও লেবাননের সেনাবাহিনী আহ্বান জানিয়েছে।

হিজবুল্লাহ এসব বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। এর আগে বৃহস্পতিবার গোষ্ঠীটি বলেছিল, “সময়সীমা মেনে চলার ব্যর্থতা চুক্তির স্পষ্ট লঙ্ঘন হবে, আর এটি লেবাননের সার্বভৌমত্বেরও লঙ্ঘন হবে এবং দখলদারিত্বের একটি নতুন পর্যায়ে প্রবেশ করবে।”

কিন্তু ইসরায়েলি সেনারা চুক্তিতে নির্ধারিত সময়সীমা পার হওয়ার পরও থেকে গেলে গোষ্ঠীটি কী প্রতিক্রিয়া জানাবে, সে বিষয়ে বিবৃতিতে কিছু বলা হয়নি।

দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনায় বিষয়ে জ্ঞাত পশ্চিমা এক কূটনীতিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, ইসরায়েল জানিয়েছে যে দক্ষিণ লেবাননে হিজবুল্লাহর অবকাঠামো ধ্বংসে তাদের আরও সময় লাগবে এবং প্রাথমিকভাবে তাদের অবস্থানের মেয়াদ আরও ৩০ দিন বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছে।

ইসরায়েলের এ ধরনের পরিকল্পনা তারা কী প্রতিক্রিয়া জানাবে তা নিয়ে হিজবুল্লাহ কোনো মন্তব্য না করায় সেটি তাদের দুর্বল অবস্থার ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে ধারণা পর্যবেক্ষকদের।

ইরান সমর্থিত লেবাননের সশস্ত্র, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনটি ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাতে মারাত্মকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে, তবে তারপরও লেবাননের শিয়া মুসলিমদের কাছ থেকে উল্লেখযোগ্য সমর্থন পাচ্ছে তারা।

 

 

কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো। বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।