‘ঝাঁকে উড়ে আকাশজুড়ে দেখতে কি সুন্দর/ জালালের জালালী কইতর’, দ্বীনের নবী মোস্তফায় রাস্তা দিয়া হাঁইটা যায়/হরিণ একটা বান্ধা ছিল গাছেরই তলায়’, এমন অনেক কালজয়ী গানের স্রষ্টা বাউল শাহ আব্দুল হামিদ জালালী আর নেই।
সিসিকের সাবেক মহিলা কাউন্সিলর জাহানারা খানম মিলনের স্বামী ও সাংবাদিক সুবর্ণা হামিদের পিতা বাউল আবদুল হামিদ জালালির মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে সিলেটে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সিলেটের জালালাবাদ রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী সন্তান নাতি নাতনিসহ অসংখ্য আত্মীয় স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
২০০৮ সাল থেকে অসুস্থ এ বাউল শিল্পী ৪ বার স্ট্রোক করেন। দরাজ গলার এ বাউলশিল্পী মৃত্যুর আগে নির্বাক হয়ে পড়েন। ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে থাকতেন শুধু। গুণী এ বাউলের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার জামাতা চ্যানেল আই’র সিলেট প্রতিনিধি সাদিকুর রহমান সাকি। তিনি বলেন, বুধবার রাতে বাউলের অবস্থার অবনতি হয়। দ্রুত সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আইসিইউ না পাওয়ায় রাতেই রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে সেখানে তার মৃত্যু হয়।
বাউল আবদুল হামিদ জালালি অসংখ্য কালজয়ী গানের স্রষ্টা। এগুলোর মধ্যে ঝাঁকে উড়ে আকাশজুড়ে/দেখতে কী সুন্দর/ জালালি কইতর/ জালালের জালালি কইতর’। হজরত শাহজালাল (রহ.) দরগাহর প্রাঙ্গণজুড়ে হাজারো জালালি কবুতরের ওড়াউড়ি দেখে ১৯৭৮ সালে তিনি এ গানটি লিখেছিলেন। এছাড়াও দ্বীনের নবী মোস্তফায় রাস্তা দিয়া হাঁইটা যায়/ হরিণ একটা বান্ধা ছিল গাছেরই তলায়’, ‘মায়াবিনী কালনাগিনী, মায়াবিনী কালসাপিনী জগৎ খেয়ে চেয়ে রয়/ পুরুষ মরলো ব্যভিচারে নারী কিন্তু দোষী নয়’-শীর্ষক গানগুলো দেশে বিদেশে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
গুণী এ বাউলের মৃত্যু সংবাদ শুনে দুপুর থেকে তার ভক্ত অনুসারীসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের ভিড় জমে তার গোয়াইপাড়াস্থ বাসভবনে।