সিলেটের সাদা পাথর পর্যটন কেন্দ্রের পাথর আনতে গিয়ে আবারও শ্রমিক নিখোঁজ থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। নিখোঁজ শ্রমিক অফিক মিয়া (৪২)। তিনি উপজেলার পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়নের কালীবাড়ী গ্রামের মৃত মইবুর রহমানের ছেলে। গত তিন বছরে আরও দুই শ্রমিক নিহত হয়েছে। উপজেলার রাজনগর গ্রামের হেলাল মিয়া (৩২) ও জালালাবাদ থানার জহির আলম (২০) নামে দুই শ্রমিক পাথর আনতে গিয়ে নৌকা ডুবিতে মারা যান। সম্প্রতি জিরো পয়েন্ট থেকে সাদা পাথর চুরি বৃদ্ধি পেয়েছে। গতকাল রাত আনুমানিক ০৯ টার সময় কালাইরাগ সীমান্ত ১২৫১ পিলার ঘেঁষা ভোলাগঞ্জ রোপওয়ের উত্তরপার্শ্বে জিরো পয়েন্টের সংরক্ষিত স্থান থেকে নিখোঁজ ব্যাক্তি সহ রফিক, সফিক ও জজ মিয়া নামে তিন শ্রমিক বারকি নৌকা দিয়ে পাথর আনতে গিয়ে নৌকা ডুবে যায়। এ সময় অন্যরা সাতরে নদী তীরে উঠতে পারলেও অফিক মিয়া নদীর স্রোতে হারিয়ে যায়। এরপর স্থানীয় ভাবে নিখোঁজ অফিক মিয়াকে খুজতে নদীতে উদ্ধার অভিযান চালালেও তাকে আর পাওয়া যায়নি।
পরদিন সকাল ১০ টায় ফায়ার স্টেশনের ডুবুরি দল উদ্ধারে নামে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত নিখোঁজ অফিক মিয়াকে পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় বারকি শ্রমিক সূত্রে জানা যায়, ভোলাগঞ্জ ফাড়ির কথিত লাইনম্যান এরশাদ শিকদারের নির্দেশেই পাথর চুরি করতে জিরো পয়েন্ট এলাকায় গিয়েছিলেন নিখোঁজ অফিক মিয়াসহ অন্য বারকি শ্রমিকরা। প্রতি বারকি নৌকায় “লাইন খরচ” হিসেবে এরশাদ ১ হাজার টাকা করে চাঁদা নেন। এছাড়াও বিজিবির লাইনম্যান খ্যাত কালাইরাগ গ্রামের আব্দুস সালামের পুত্র রুফেজ (২৫) বারকি শ্রমিক থেকে বিজিবির নাম ভাঙ্গিয়ে প্রতি বারকি নৌকা থেকে ১০০০ টাকা চাঁদা নেন।
২০২১ এ বন্যাকালীন সময়ে শ্রমিকরা জিরো পয়েন্ট এলাকা থেকে পাথর চুরি করে আনার সময় জহির আলম নামে এক শ্রমিক নৌকা ডুবে মারা যায়। সে সময় পুলিশের নাম ভাঙ্গিয়ে বারকি শ্রমিকদের কাছ থেকে চাঁদা নেওয়ার অভিযোগ উঠে সাহাব উদ্দিন নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। সে সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন আচার্যের নির্দেশে সাহাব উদ্দিন সহ জড়িত একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন পুলিশ। এরপর থেকে সাহাব উদ্দিন সহ সে মামলার আসামীরা নিজেদের গুটিয়ে নেন। সাহাব উদ্দিনের শূন্যতা পূরনে এগিয়ে আসেন এরশাদ শিকদার নামে আরেক যুবক। তার নেতৃত্বেই বারকি শ্রমিকরা জিরো পয়েন্টের সংরক্ষিত স্থান থেকে পাথর চুরি করছে কিছু শ্রমিক।
এ দিকে নিখোঁজ অফিকের বড় ভাই মাসুক মিয়া প্রতিবেদককে জানান, আমার ভাই এই প্রথম বারকি নৌকা দিয়ে সাদা পাথর আনতে গিয়েছিল। সংসারে অভাব থাকায় অন্য বারকি শ্রমিকদের সাথে পাথর আনতে গিয়েছিল। তার সাথে আরও তিনজন ছিল। নৌকা ডুবে অন্যরা তীরে উঠতে পারলেও অফিক নিখোঁজ রয়েছেন।
এদিকে বিস্বস্থ্য একটি সূত্র থেকে জানা যায়, সংরক্ষিত স্থান থেকে পাথর আনতে গিয়ে নিখোঁজের ঘটনাটি ভিন্নখাতে নেওয়ার জন্য একটি চক্র থানা প্রশাসনকে ভূল তথ্য দিচ্ছে বলে জানা যায়।
তবে সংরক্ষিত স্থান থেকে পাথর আনার বিষয়টি কৌশলে স্বীকার করেন গোয়াইনঘাট সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পদোন্নতি প্রাপ্ত) প্রবাস কুমার সিংহ। তিনি প্রতিবেদককে জানান, এরশাদের নাম এর আগেও শুনেছি। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কোম্পানীগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছি।
বিস্তারিত আসছে….