সিলেট-তামাবিল সড়কে সোমবার (১০ জুলাই) ভোর ৬টা থেকে সব ধরনের পরিবহন চলাচল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন শ্রমিক নেতারা। রোববার (৯ জুলাই) বিকেলে এক বৈঠকে সিদ্ধান্ত এ সিদ্ধান্ত নেন তারা। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিষয়টি সিলেটভিউ-কে নিশ্চিত করেন সিলেট জেলা বাস মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়ন সভাপতি মইনুল ইসলাম।
তিনি সিলেটভিউ-কে বলেন- ‘গত শুক্রবার রাতে সিলেট-তামাবিল সড়কের দরবস্তে এক দুর্ঘটনায় ৫ জন মারা যান। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আজ (রোববার) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এ সড়কে যাত্রীবাহী বাস চলতে দেননি জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কামাল আহমেদ। তাঁর এ কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে ও তাঁকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবিতে আমরা এ কর্মবিরতির ডাক দিয়েছি। আমাদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করেছে সব পরিবহন শ্রমিক সংগঠন। সব সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে নিয়ে আজ বিকেলে আমাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ আন্দোলন।’
এর আগে ওই ৫ জনের মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র শনিবার (৮ জুলাই) রাতে দরবস্ত বাজার মসজিদে সিলেটের বৃহত্তর জৈন্তাপুর ১৭ পরগণার সালিশ সমন্বয় কমিটির এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে সিলেট-তামাবিল সড়কে অদক্ষ ও লাইসেন্সবিহীন চালকদের ছাঁটাইয়ের দাবি উত্থাপন করে এর আগ পর্যন্ত রোববার থেকে ওই সড়কে বাস-মিনিবাস চলাচল বন্ধ করার ঘোষণা দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে রোববার বিকেলে জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কামাল আহমেদ সিলেটভিউ-কে বলেন, সালিশ কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সিলেট তামাবিল মহাসড়কে আজ কোনো ধরনের বাস-মিনিবাস চলাচল করতে পারবে না। তবে অন্য যেকোন যানবাহন স্বাভাবিকভাবেই চলবে। কারণ
দরবস্ত বাজারে বাসচাপায় ৫ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় বাসমালিক সমিতি বা এই রুটের পরিবহনের সঙ্গে জড়িত কেউই দুঃখ প্রকাশ করেনি। এমনকি আহত বা নিহতদের পরিবারের কোনো খোঁজখবরও নেননি তারা। এ ঘটনায় এলাকার মানুষের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার রাতে হত্তর জৈন্তাপুর ১৭ পরগণার সালিশ সমন্বয় কমিটির বৈঠক হয় এবং সে বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সিলেট-তামাবিল সড়কে বাস-মিনিবাস চলাচল বন্ধ করার ঘোষণা দেওয়া হয়।
তিনি বলেন- রোববার সকাল থেকেই বিক্ষুব্ধ জনতা রাস্তায় ছিলো এবং কয়েকটি বাস আটকেও রাখা হয়। তবে গোয়াইনঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির মৃত্যু বিবেচনায় সেগুলো দুপুরের পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। আজ (রোববার) সন্ধ্যার মধ্যে যদি পরিবহন শ্রমিক নেতারা সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ না করেন তবে কাল (সোমবার) থেকে সিলেট-তামাবিল সড়কে আর বাস-মিনিবাস চলতে দেওয়া হবে না।
উল্লেখ্য, শুক্রবার রাত ১০টার দিকে সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের জৈন্তাপুর উপজেলার দরবস্ত এলাকায় পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের সামনে বাস ও ইজিবাইকের (টমটম) সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই পাঁচজন নিহত হন। এ ঘটনায় আহত হন কয়েকজন।
সূত্র:সিলেট ভিউ