সিলেটের ভোলাগঞ্জ ধলাই নদীতে পাথরবোঝাই নৌকা ডুবে নিখোঁজ হওয়া শ্রমিক অফিক মিয়ার (৪২) লাশ আজ ভোর সোয়া ০৫ টায় ভেসে উঠেছে। ভোলাগঞ্জ রেলওয়ে বাংকারের মসজিদ বরাবর পূর্বদিকে নদীতে লাশটি ভেসে ওঠে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন কোম্পানীগঞ্জ থানা পরিদর্শক (মিডিয়া) মাসুদ রানা।
নিহত অফিক মিয়া কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়নের কালীবাড়ী গ্রামের মৃত মইবুর রহমানের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার রাত আনুমানিক ৯টায় ভারত সীমান্তঘেঁষা ধলাই নদের পূর্ব পাড়ে ১২৫১ নম্বর পিলারের কাছে পাথরবোঝাই একটি নৌকা ডুবে যায়। এ সময় নৌকায় অফিক ছাড়াও রফিক, সফিক ও জজ মিয়া নামে আরও তিন বারকি শ্রমিক ছিলেন। বাকিরা সাঁতার কেটে তীরে উঠলেও নিখোঁজ হন অফিক। স্থানীয় লোকজন অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাঁর সন্ধান পায়নি। পরে সিলেট থেকে ফায়ার সার্ভিসের একটি ডুবুরি দল অফিককে উদ্ধারের ব্যার্থ চেষ্টা করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বারকি শ্রমিক সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার রাতে পুলিশের কথিত লাইনম্যান খ্যাত এরশাদ শিকদার ও বিজিবির কথিত লাইনম্যান রুফেজকে এক বারকি সাদা পাথর আনতে দুই হাজার টাকা দিয়ে তাদের (এরশাদ ও রুফেজ) নির্দেশে জিরো লাইনে যায় অফিক সহ অন্য তিন বারকি শ্রমিক। সাদা পাথর বোঝাই করে নিয়ে আসার সময় ঘটনাস্থলে পানির ঘুর্ণির মুখে ডুবে যায় নৌকাটি। অন্য শ্রমিকরা নদীর তীরে উঠলেও পানির স্রোতে হারিয়ে যায় অফিক মিয়া। সেই বারকি শ্রমিক আরও জানান, ঐদিন অতিরিক্ত পানির চাপ ছিল। পাথর আনার পরিবেশ ছিল না। তবুও এরশাদ এবং রুফেজ তাদেরকে পাথর আনতে পাঠায়। তিনি আরও জানান, এই মৃত্যুর দায়ভার এরশাদ এবং রুফেজকেই নিতে হবে। তারা জানতো সেখানে দূর্ঘটনা ঘটতে পারে।
২০২১ এ বন্যাকালীন সময়ে শ্রমিকরা জিরো পয়েন্ট এলাকা থেকে পাথর চুরি করে আনার সময় জহির আলম নামে এক শ্রমিক নৌকা ডুবে মারা যায়। সে সময় পুলিশের নাম ভাঙ্গিয়ে বারকি শ্রমিকদের কাছ থেকে চাঁদা নেওয়ার অভিযোগ উঠে সাহাব উদ্দিন নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। সে সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন আচার্যের নির্দেশে সাহাব উদ্দিন সহ জড়িত একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন পুলিশ। মামলা নং জিআর ৭১। এরপর থেকে সাহাব উদ্দিন সহ সে মামলার আসামীরা নিজেদের গুটিয়ে নেন। সাহাব উদ্দিনের শূন্যতা পূরনে এগিয়ে আসেন এরশাদ শিকদার নামে আরেক যুবক। তার নেতৃত্বেই বারকি শ্রমিকরা জিরো পয়েন্টের সংরক্ষিত স্থান থেকে পাথর চুরি করছে কিছু শ্রমিক।
এ দিকে নিহত অফিকের বড় ভাই মাসুক মিয়া প্রতিবেদককে জানান, আমার ভাই এই প্রথম, বারকি নৌকা দিয়ে সাদা পাথর আনতে গিয়েছিল। সংসারে অভাব থাকায় অন্য বারকি শ্রমিকদের সাথে পাথর আনতে গিয়েছিল। তার সাথে আরও তিনজন ছিল। নৌকা ডুবে অন্যরা তীরে উঠতে পারলেও অফিক নিখোঁজ ছিল।
এদিকে ঘটনার সাথে জড়তি সন্দিগ্ধ ব্যক্তিদের বাচাতে সাদা পাথর আনতে গিয়ে মৃত্যুর ঘটনাকে ভিন্নখাতে নেওয়ার জন্যে একটি চক্র উঠেপড়ে লেগেছে।
বিস্তারিত আসছে….