সিলেটে পারিবারিক কলহের জেরে স্বামীর ছুরিকাঘাতে শিমলা রাণী নাথ (২১) নামে এক গৃহবধূ খুন হয়েছেন ।
শুক্রবার (২১ জুলাই) বিকেলে শাহপরান মেজরটিলা নাথপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। শিমলা নগরীর ৩২ নং ওয়ার্ডের নূরপুর এলাকার নিপেন্দ্র নাথের মেয়ে।
এ ঘটনায় নিহতের স্বামী বিশ্বজিৎ দেব নাথকে (২৬) গ্রেপ্তার করেছে শাহপরাণ থানা পুলিশ। বিশ্বজিৎ সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার নৃপেন্দ্র দেবনাথের ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে , শুক্রবার বেলা ৩টার দিকে নিহত শিমলা রাণী নাথ ঘরের কাজ করছিলেন। এসময় স্বামী বিশ্বজিৎ এসে পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলাপ শুরু করেন। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে কথাকাটাকাটি শুরু হলে স্ত্রীকে ছুরিকাঘাত করেন বিশ্বজিৎ। স্থানীয়রা আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেছে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে,স্ত্রীকে খুন করে বাসা থেকে পালিয়ে যান ঘাতক স্বামী বিশ্বজিৎ। তাকে ধরতে সিলেট নগরীর বিভিন্ন স্থানে ঝটিকা অভিযান চালায় পুলিশের একাধিক টিম। শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টায় নগরীর শাহপরাণ এলাকার জাকারিয়া সিটি পার্কে অভিযান চালিয়ে বিশ্বজিতকে গ্রেপ্তার করে শাহপরাণ থানা পুলিশ। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, বিশ্বজিৎকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আগামীকাল শনিবার তাকে আদালতে সোপর্দ করা হবে।
নিহত শিমলার বাবা জিতেন্দ্র দেবনাথ বলেন, বিশ্বজিৎর সাথে ৬/৭ মাস আগে শিমলার বিয়ে দিয়েছিলেন। তার বাবা একজন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা। ভাই বোনেরাও সরকারি চাকরি করে। তবে বিশ্বজিৎ বেকার ছিলেন। অপরদিকে শিমলা নগরের নয়াসড়ক এলাকায় একটি কসমেটিক্সের দোকানে চাকরি করতেন। একইসাথে সিলেট সরকারি মহিলা কলেজে অনার্স পড়ছিলেন একুশ বছরের এ তরুণী। বেকার স্বামীকে বিয়ের পর থেকে একটা কিছু করার জন্য তাগাদা দিতে থাকেন তিনি। এ নিয়ে দু’জনের মধ্যে মনোমালিন্য চলছিল। কিছুদিন পূর্বে শিমলা স্বামীর বাসা ছেড়ে আমাদের কাছে চলে আসেন। বিশ্বজিৎ তাকে ফিরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) দুপুরের দিকে নিজের কিছু বখাটে বন্ধু-বান্ধব নিয়ে শিমলার কর্মস্থলে গিয়ে তাকে নানাভাবে হুমকি ধমকি দিয়েছেন। এ কারণে তার বাবা বৃহস্পতিবারই শাহপরাণ থানায় একটি জিডি দায়ের করেছিলেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শাহপরান থানার ওসি আবুল খায়ের বলেন, প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে পারিবারিক কলহের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। নিহত শিমলা হুমকি দেয়ার কারণে তার পিতা থানায় সাধারণ ডায়রি করেন। নিহতের স্বামী বেকার ছিলো। এনিয়ে তাদের সবসময় মনোমালিন্য দেখা দিত। ঘাতক স্বামী অভিজিৎকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত আছে।